BHAGAT SINGHBHAGAT SINGH

ভগৎ সিং এর জীবনী

BIOGRAPHY BHAGAT SINGH


অন্ধকার ছিল যখন

এই ভারত মাতার বুকে,

তোমার মত বীরসেন সৈনিক।

আলোক দেখলেও স্বাধীনতার চিত্রে

ভূমিকা:

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অন্যতম মহান বিপ্লবী হলেন ভগৎ সিং। যিনি ভারতীয়দের মধ্যে স্বাধীনতার প্রেরণা জাগিয়ে তুলেছিলেন। তার সাহসিক কর্মকান্ড এবং ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী মনোভাবের কারণে তিনি একজন জাতীয় নায়ক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হন। ভগৎ সিং এর জীবন ও আত্মত্যাগ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়।

জন্ম ও বংশ পরিচয়: 

১৯০৭ সালের ২৮ শে সেপ্টেম্বর ভগত সিং লায়লপুর জেলার নিকটস্থ খাতারকর কালান গ্রামের একটি জট সান্ধু শিখপরিবারে ভগৎ সিং জন্মগ্রহণ করেন সান্ধু। তার মায়ের নাম ছিল বিদ্যাবতী।

শিক্ষাজীবন: 

ভগৎ সিং খুব অল্প বয়সে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব পোষণ করতে শুরু করেন। তিনি পড়াশোনা সময় থেকেই স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি আকৃষ্ট হন। তিনি বিভিন্ন বিপ্লবী সাহিত্য পড়তে শুরু করেন এবং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে থাকেন। ব্রিটিশদের শোষণ ও অবিচারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিপ্লবের বিশ্বাস তাকে বিপ্লবী আদর্শের দিকে আকৃষ্ট করে।

স্বাধীনতা সংগ্রামের পথ চলা:

ভগৎ সিং প্রথমের মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন। তবে মহাত্মা গান্ধী যখন ১৯২২ সালে চৌরাচিরা ঘটনার পর আন্দোলনের স্থগিত করেন, তখন ভগৎ সিং অসন্তুষ্ট হন এবং তিনি সশস্ত্র বিপ্লবীদের পথ বেছে নেন। এরপর তিনি হিন্দুস্তান সোসাইটি রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনের যোগ দেন। যা চন্দ্রশেখর আজাদ এবং অন্য বিপ্লবী দ্বারা প্রচলিত ছিল।

বিপ্লবী কর্মকাণ্ড:

১৯২৮ সালে লালা রাজপথ রায়ের উপর ব্রিটিশ পুলিশের বর্বর হামলায় প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভগৎ সিং সশস্ত্র প্রতিরোধ পদ বেছে নেন। তিনি তার সহকর্মীর শপথ নেন লালা রাজপথ রায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেবার। ১৯২৮ সালের ৭ ডিসেম্বর ভগৎ সিং ও তার সহকর্মী শিবরাম রাজগুরু ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার জে .পি সানডার্সকে হত্যা করেন। ১৯২৯ সালে ৮ ই এপ্রিল, ভগৎ সিং এবং বটুকেশ্বর দত্ত দিল্লির কেন্দ্রীয় আইনসভায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। এবং এই বিস্ফোরণটি ছিল একটি প্রতিকী কর্মকান্ড। যা কাউকে হত্যা করার উদ্দেশ্য নয় বরং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো। বিস্ফোরণের পর তারা নিজেরাই আত্মসমর্পণ করেন।

কারাবাস ও বিচার:

ভগৎ সিংকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে সানডার্স হত্যার অভিযোগ মামলা দায়ের করা হয়। ব্রিটিশ সরকার তাকে কঠোর শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন এবং রিচার্জ শেষে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। বিচার চলাকালীন ভগৎ সিং অনসন শুরু করেন এবং ভারতীয় বন্ধুদের প্রতি ব্রিটিশ অবমানকর আচরণের প্রতিবাদ জানান। তার অনশন ১১৬ দিন পর্যন্ত চলতে থাকে যা স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি শক্তিশালী প্রেরণ করেছিল।

দিল্লির অ্যাসেম্বলিতে বোমা বিস্ফোরণ:

১৯২৯ সালে ৮ ই এপ্রিল ভগৎ সিং এবং ব্রিটিশ সরকারের দমন মূলক আইন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে দিল্লির কেন্দ্রীয় আইনসভা বোমা বিস্ফোরণ করেন এই বোমাটি প্রতীকী ছিল এবং কোন ঘটনার প্রাণহানি উদ্দেশ্য ছিল না। বিস্ফোরণের পর তারা আত্মসমর্পণ করেন এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ভগৎ সিং এর আদর্শ:

ভগৎ সিং কেবলমাত্র একজন সশস্ত্র বিপ্লবী ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন বুদ্ধিজীবী বিপ্লবী। তিনি সমাজতন্ত্র এবং নিপীড়িত মুক্তির বিশ্বাসী ছিলেন। তার মতে ভারতের স্বাধীনতা কেবল ব্রিটিশ উৎখাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং সমাজের শোষিত শ্রেণীর মুক্তি এবং সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা ছিল তার লক্ষ্য।

ভগৎ সিং এর মৃত্যু:

ভগৎ সিং ২৩ শে মার্চ ১৯৩১ সালে লাহোর জেলে ফাঁসি দেয়া হয়। সময় ভগৎ সিং এর বয়স ছিল মাত্র ২৩ বছর। ভগৎ সিং এর মৃত্যুর পর ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক অমর  হিসাবে স্মরণীয় হয়ে ওঠেন।

উপসংহার

ভগৎ সিং এর মত ভারতের বিপ্লবী এবং দেশপ্রেমিক ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে। ভগৎ সিং এর সমাজতন্ত্রের আদর্শ এবং স্বাধীনতার জন্য তার অটল অঙ্গীকার একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। ভগত সিং অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তাদের অনুরনিত করে। ভগৎ সিং ছিলেন একজন শ্রদ্ধেয় এবং সাহসের প্রতীক হিসাবে তার উত্তর সংরক্ষণ করেছে।

“তারা আমাকে হত্যা করতে পারে, কিন্তু তারা আমার ধারণাকে হত্যা করতে পারে না। তারা আমার শরীরকে চূর্ণ করতে পারে। কিন্তু আমার আত্মাকে চূর্ণ করতে পারবে না”।

ভগৎ সিং এর জীবন আদর্শ আত্মত্যাগ আজও ভারতবর্ষের মনে অম্লান হয়ে আছে। তার সাহসিকতা, ত্যাগ এবং সংগ্রাম যুব সমাজের জন্য অনুপ্রেরণা।

ভগৎ সিং এর মত বিপ্লবী আজও আমাদের মধ্যে বেঁচে আছেন। বেঁচে থাকবে না আজীবন।

বিপ্লবী ভগৎ সিং এর জীবনী যদি ভালো লেগে থাকে যদি আপনার সাহায্যকারী মনে হয় তাহলে আপনার বন্ধু, বান্ধবী ও সহপাঠীদের মধ্যে পোস্টটি শেয়ার করে দেবেন। আরো নিত্য নতুন তথ্য পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন চোখ রাখুন। এবং আমাদের সাথে থাকুন।

।।ধন্যবাদ।।


Discover more from My State

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Skip to content