Jawaharlal NehruJawaharlal Nehru

জহরলাল নেহেরুর জীবনী 

Jawaharlal Nehru


ভূমিকা:

জহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী এবং আধুনিক ভারতের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং গণতন্ত্রের একজন প্রগতিশীল প্রবক্তা ছিলেন। নেহেরু তারা রাজনৈতিক নেতৃত্ব, কূটনৈতিক দক্ষতা এবং শিক্ষানীতির দ্বারা ভারতে উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় অবদানে রেখেছেন।

জহরলাল নেহেরুর নাম আমরা তো সকলেই শুনেছি সকলেই শুনেছি । এবং তার সম্পর্কে কিছু না কিছু জানি। সকলেই আমরা তার জীবনী বইয়ের পাতায় পড়েছি ভারত স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুর জীবনী আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম।

জন্ম ও বংশ পরিচয়:

স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু ১৮৮৯ সালের ১৪ই নভেম্বর এলাহাবাদের জহরলাল নেহেরু জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল মতিলাল নেহেরু। মাতার নাম ছিল স্বরূপা রানী। জহরলাল নেহেরু পিতা পেশায় একজন এলাহাবাদ হাইকোর্টের একজন বিখ্যাত আইনজীবী।

শৈশবকাল:

জাহান্নামের শৈশব বলতে তিনি খুবই ধনী পরিবারের জন্মগ্রহণ করার কারণে বিলাসিতা এবং আদরের মধ্যে দিয়ে তিনি বড় হয়েছিলেন। জহরলাল নেহেরুর বাল্যকাল শিক্ষালাভ করেছিলেন ইংরেজ টিউটরের এর কাছ থেকে।

শিক্ষাজীবন:

তিনি ছোটবেলায় ইংরেজ টিউটরের কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করার পরে। ১৯০৫ সালে জহরলাল নেহেরু কে পাঠানো হয়েছিল বিলেতে। সেখানে তিনি সাত বছর অধ্যায়ন করেছিলেন। ১৯২২ সালে তিনি দেশে ব্যারিস্টার হয়ে ফিরে আসেন।

কর্মজীবন:

জহরলাল নেহেরু কর্মজীবন বলতে ১৯২২ সালে জহরলাল নেহেরু এলাহাবাদ পৌরসভায় চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। আইন ব্যবসা ছাড়াও জহরলাল নেহেরুর তার পাশাপাশি তিনি পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী রাজনীতিতেও নিজের খ্যাতি অর্জন করতে থাকেন।

স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ:

জহরলাল নেহেরু ১৯১৯ সালে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। গান্ধীর নেতৃত্বে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন সক্রিয় ভূমিকা পালন করে কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতা হয়ে ওঠেন জহরলাল নেহেরু। তিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন সময়ে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের জন্য কারাবরণ করেন। জহরলাল নেহেরুর কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে বেশ কয়েকবার দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৩৯ সালে লাহোর অধিবেশনে কংগ্রেস ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানান।

জহরলাল নেহেরু প্রধানমন্ত্রী হওয়া:

ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট জহরলাল নেহেরু, ভারতে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৩৯ সালে ভারতীয় কংগ্রেস দল স্বাধীনতা পক্ষে সর্বাত্মক রায় দেয়। তারপর ১৯৩৭ সালে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক নির্বাচনে কংগ্রেস দলের বিজয়ের প্রধান স্থাপক ছিলেন জহরলাল নেহরু।

• অর্থনৈতিক নীতি:

নেহেরু ভারতের শিল্পায়ন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পাঁচ বছরের পরিকল্পনা প্রবর্তন করেন। তিনি ভারতের ভারী শিল্প, বিজ্ঞান প্রযুক্তি উন্নয়নের উপর জোর দেন। ভারতের আইআইটি, আই আই এম এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা আবেদনের ফল।

•বৈদেশিক নীতি:

নেহেরু স্বাধীন ভারতের বৈদেশিক নীতি স্থাপিত ছিলেন। তিনি অজোট আন্দোলনের প্রথম প্রবক্তা ছিলেন। এবং শীতল যুদ্ধের সময় ভারতের সামরিক নিরপেক্ষ রাখার নীতি গ্রহণ করেন। তার পঞ্চশীল নীতি অন্যান্য দেশের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করার  লক্ষ্যে প্রণীত হয়।

• শিক্ষা এবং সমাজ সংস্কার:

নেহেরু বিশ্বাস করতেন যে একটি শক্তিশালী জাতির গড়ার জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শিক্ষার প্রসার এবং জাতীয় উন্নয়নের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগে যোগ দেন। তিনি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন এবং সমাজতান্ত্রিক আদর্শ প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।

 

উল্লেখযোগ্য  অবদান:

• আধুনিক ভারতের স্থাপিত হিসাবে পরিচিত।

•ভারতের গণতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।

•ভারতের অর্থনৈতিক শিল্পায়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

•অজোট আন্দোলনের নেতৃত্ব এবং পঞ্চশীল নীতির প্রবর্তন।

 

জহরলাল নেহেরু বিশ্ব রাজনীতি:

বিশ্ব রাজনীতিতে জগন্নাথ নেহেরু সবসময় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে গেছেন। তিনি জোট নিরপেক্ষ রাজনীতির পক্ষ অবলম্বন করেন। ১৯৬১ সালে মিশরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কর্নেল  নার্সের, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুকর্ণ যুগোশ্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটোর সঙ্গে এক যোগে কাজ করে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন গড়ে তোলেন।

উল্লেখযোগ্য রচনা

•“The Discovery of India”: নেহেরুর অন্যতম বিখ্যাত গ্রন্থ, যেখানে তিনি ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বিশ্লেষণ করেছেন।

•“An Autobiography”: এটি তাঁর আত্মজীবনী, যেখানে তিনি নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের বিবরণ দিয়েছেন।

•নেহেরু ছিলেন একজন চিন্তাবিদ, লেখক, এবং অসাধারণ নেতা, যাঁর নেতৃত্বে ভারত একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক, এবং আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

জহরলাল নেহেরু মৃত্যু:

১৯৬২ সালে ১ ম ভারত চীন যুদ্ধের পরে নেহেরু অসুস্থ হয়ে পড়েন। এবং কাশ্মীরে কিছুদিন বিশ্রাম নেন ১৯৮৪ সালের মে মাসে কাশ্মীর থেকে ফেরার পথে নেহের হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ১৯৬৪ সালের ২৭শে মে নেহেরু তার কার্যালয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

উপসংহার:

১৯৬৪ সালের ২৭ শে মে জহরলাল মৃত্যুবরণ করেন তার মৃত্যুর পর ভারতীয় রাজনীতি এবং সমাজে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। নেহেরুর শাসনামলে গৃহীত নীতি ও সংস্কার ভারতে আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে স্যার জীবনের আদর্শ ও কাজ আজও ভারতীয় রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলে। তার কাজ এবং অবদানের মধ্য দিয়ে তাই তিনি আজও আমাদের মধ্যে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে আজীবন।

স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুর পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে যদি আপনার সাহায্যকারী মনে হয় তাহলে আপনার বন্ধু, বান্ধবী ও সহপাঠীদের মধ্যে পোস্টটি শেয়ার করে দেবেন। আরো নিত্য নতুন তথ্য প্রতি আমাদের এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন চোখ রাখুন।

।।ধন্যবাদ।।

 


Discover more from My State

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Skip to content