Kusumkumari DasKusumkumari Das

কুসুম কুমারী দাসের জীবনী

Kusum Kumari Das


কুসুম কুমারী দাস ছিলেন ভারতের বাংলা সাহিত্যের ও শিক্ষার একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, যিনি একজন কবি ও লেখক এবং শিক্ষাবিধ হিসাবে অবদানের জন্য তিনি  পরিচিত

সত্যি বর্তমান সময়ে  দাঁড়িয়ে কবি জীবনানন্দ দাস মায়ের কথাকে যেভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আজকে জীবনানন্দ দাশের জননী কুসুমকুমারী দাস জীবনী আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম।

জন্ম ও বংশ পরিচয়: 

কবি কুসুমকুমারী দাশ বাখরগঞ্জ জেলার বরিশাল শহরে ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে ২১ সেপ্টেম্বর  জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম ছিল চন্দ্রনাথ দাস। মাতার নাম ছিল ধনমনি দাস। কুসুম কুমারী  দাস পিতা চন্দ্রনাথ ব্রহ্ম ধর্ম গ্রহণ করায় গ্রামবাসীদের বিরোধিতায় তিনি পৈত্রিক ভিটা ছেড়ে গ্রামের বরিশালে চলে আসেন।

কুসুমকুমারী দাস শৈশবে খুব স্নেহময় ছিল। তিনি ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী ছিলেন এবং পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের থেকে বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার অভ্যাস অর্জন করেছিলেন। এবং তার পিতা-মাতা তাকে শিক্ষা গ্রহণের উৎসাহিত করতেন এবং ছোটবেলা থেকেই তাকে প্রেরণা দিতেন যাতে তিনি জীবনে বড় কিছু করতে পারেন।

প্রাথমিক শিক্ষা: 

কুসুমকুমারী দাশের শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। ছোটবেলা থেকে তিনি পাঠ্য বইয়ের প্রতি গভীর মনোযোগী ছিলেন এবং দ্রুত  শিক্ষকদের প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী হয়ে ওঠেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার পর তিনি বরিশালের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি সেখান থেকে তিনি তার প্রতিভার  প্রমাণ এবং খুব শীঘ্র বিদ্যালয়ের সেরা ছাত্রীদের মধ্যে একজন হয়ে ওঠেন।  তার পিতা-মাতা তাকে উচ্চশিক্ষা জন্য উৎসাহিত করতেন এবং কলকাতার একটি মেয়েদের কলেজে ভর্তি করেন। তার পড়াশোনার বিষয় ছিল বাংলা সাহিত্য এবং তিনি খুব শীঘ্রই একজন বিশিষ্ট ছাত্রী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন

সাহিত্যিক জীবন: 

কলেজে করার সময় থেকেই কুসুমকুমারী দাস সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন কবিতা ও ছোট গল্প লিখতে শুরু করেন যা কলেজে ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। তার লেখাগুলোর মধ্যে সমাজের নানা অসঙ্গতি এবং মানব জীবনের বিভিন্ন দিক প্রতিফলিত হত। তার লেখা খুব শীঘ্রই পাঠকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং তিনি কলেজের স্থায়িত্তিক গোষ্ঠীর একজন সক্রিয় সদস্য হয়ে ওঠেন। কলেজ  পড়ার পর তিনি পুরোপুরি সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করেন তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৯২০ সালে। এবং সেটি পাঠক মহলে খুবই প্রশংসিত হয় তার লেখা সৈনিক এবং বিষয়বস্তুর পাঠকদের মন জয় করে নেয় এবং তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত কবি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম:

কুসুমকুমারী দাশের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম গুলি এর মধ্যে বেশ কয়েকটি কবিতা হল:- ‘পথের ধারে,’ সমাজের দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষদের জীবনের কষ্ট সঙ্গমের জীবন কাহিনী তুলে ধরেছেন। এছাড়া ‘নদীর গান’ কাব্যগ্রন্থ খুবই জনপ্রিয় তার লেখা গল্পগুলির মধ্যে একটি গল্প হল ‘ফুলের গল্প’ এছাড়াও ‘শীতের সন্ধ্যা’ একটি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।

সমাজের অবদান: 

কুসুমকুমারী দা শুধুমাত্র একজন সাহিত্য কে ছিলেন না তিনি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছিলেন। তিনি নারীর অধিকার এবং শিক্ষার জন্য কাজ করেছিলেন এবং সমাজের দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষদের জন্য বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কার্যক্রমের অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার লেখার মাধ্যমে তিনি সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চেয়েছিলেন এবং সমাজের পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন

বঙ্গে ছেলে মেয়ে যাবে জাগো, জাগো পরের করুণা।

কেন শুধু মাগো- আপনারে বলে নির্ভর রাখো হবে জয়।

নিশ্চয়ই চারিদিকে হেরো কি দুঃখ দুর্দিন, কত ভাই বোন,

অন্ন বস্ত্রহীন সোনার বাংলা হয়েছে।

মলিন কি দারুণ বেদনায় ……..

 

 

ব্যক্তিগত জীবন: 

কুসুমকুমারী দাশের ব্যক্তিগত জীবন ছিল খুবই সাধারণ এবং সাদামাটা। তিনি তার পরিবারের সাথে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছেন এবং তাদের থেকে প্রেরণা পেতেন এবং তার পিতা-মাতা তাকে সর্বদা সমর্থন করতেন তার সাহিত্য চর্চার প্রতি উৎসাহিত করতেন। তিনি 1915 সালে বিয়ে করেন এবং তার স্বামী একজন শিক্ষিত এবং সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি ছিলেন। তার স্বামীর সমর্থন ও সহযোগিতায় তিনি তার সাহিত্য চর্চ অব্যাহত রাখতে সক্ষম হন।

সমাজের অবদান: 

কুসুমকুমারী দাস শুধুমাত্র একজন সাহিত্য কি ছিলেন না। তিনি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছিলেন। তিনি নারীর অধিকার এবং শিক্ষার জন্য কাজ করেছিলেন এবং সমাজের দরিদ্র অবহেলিত মানুষদের জন্য বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছিলেন তার লেখার মাধ্যমে তিনি সমাজ সচেতনা সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চেয়েছিলেন এবং সমাজের পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন।

জীবনের শেষ দিনগুলি: 

কুসুমকুমারী দাশ জীবনের শেষ দিনগুলি পাঠিয়েছিলেন বরিশালে, তার স্বাস্থ্য ক্রমাগত খারাপ হতে থাকে এবং ১৯৪৮ সালে তিনি পরলোক গমন করেন। তার মৃত্যুর পরেও তার সাহিত্যকর্ম এবং সমাজের প্রতি তার অবদান স্মরণ করা হয় এবং তিনি বাংলা সাহিত্য জগতে একজন অমর ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত হয়ে থাকবেন।

উপসংহার: 

কুসুমকুমারী দাস ছিলেন একজন অসাধারণ সাহিত্যিক এবং সমাজসেবী। তার লেখার মধ্যে তিনি সমাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছিলেন এবং সমাজের পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন।  তার জীবন ও কর্ম আমাদের সকলের জন্য প্রেরণার উৎস হিসাবে থাকবে এবং তার সাহিত্যকর্ম আমাদের চিরকাল মুগ্ধ করবে। তার জীবনের কাহিনী আমাদের শিখিয়েছে যে মেধা এবং অধ্যবস্যয়ের মাধ্যমে আমরা জীবনের যে কোন কিছু অর্জন করতে পারি। এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারি।

 

একজন অসাধারণ সাহিত্যিক এবং সমাজসেবী এর কুসুমকুমারী দাসের যদি পোস্টটি ভালো লেগে থাকে যদি আপনার সাহায্যকারী মনে হয় তাহলে আপনার বন্ধু, বান্ধবী, সহপাঠীদের মধ্যে শেয়ার করে দেবেন। আরো নিত্যনতুন তথ্য পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটে সর্বদাই চোখ রাখুন। 

।।ধন্যবাদ।।

 

 


Discover more from My State

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Skip to content