রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়

রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় জীবন কাহিনী

Rangalal Bandyopadhyay


স্বাধীনতা -হীনতায় কে বাঁচিতে

চাই হে কে বাঁচিতে চায়?

দাসত্ব শৃংখল বল কে পারিবে

পায়ে হে, কে পারিবে পায়

কোটি কল্প দাস থাকা নরকের

প্রায় হে, নরকের প্রায়

দীনকের স্বাধীনতা, স্বর্গ- সুখ

তায় হে স্বর্গ সুখ তায়

স্বার্থক জীবন তার বাহু-বল

তার হে ,বাহুবল তার

আত্মনাশে আছে যেই করে দেশের

উদ্ধার হে, দেশের উদ্ধার

 

জন্ম ও পরিবার: 

১৮২৭ সালে মাতুলায়, বর্ধমান জেলার কালনার  সন্নকটস্থ হুগলি জেলার বাকুলিয়া নামক গ্রামে  জন্মগ্রহণ করেন রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আদি নিবাস বর্তমান হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়া সন্নিকটস্থ  রামেশ্বরপুর গ্রামে। তার পিতা ছিলেন রামনারায়ণ মাতা ছিলেন  হরসুন্দরী দেবী। পিতা মারা যাবার পর রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় মাতুলয়ে লালিত পালিত হন।

শিক্ষাজীবন:

রঙ্গলাল বন্দোপাধ্যায় বাকুলিয়ার স্থানীয় পাঠশালা ও মিশনারি স্কুলের শিক্ষা শেষে হুগলির মহাসিন কলেজে কিছুদিন পড়াশোনা করেন। ইংরেজি সংস্কৃত এবং প্রাচীন উড়িয়া কাব্য ও সাহিত্য তার জ্ঞান ছিল।

কর্মজীবন:

কবি ইশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সাহায্যে তিনি প্রথম সংবাদ প্রভাকর পত্রিকায় রচনা আরম্ভ করেন। ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের প্রকাশিত এডুকেশন গেজেট পত্রিকার সহ সম্পাদক ছিলেন। ১৮৫২ সালে প্রকাশিত মাসিক সংবাদ সাগর ও ১৮৫৬ সালে প্রকাশিত সপ্তাহিক বার্তবাহ পত্রিকার দুটোতে তিনি সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৬০ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে প্রায় ছয় মাসের জন্য তিনি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হলেও কিছুদিনের মধ্যে চাকরি ছেড়ে আইকর নির্ধারক এবং কালেক্টর হিসেবে যোগদান করেন। রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় এরপর ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুনামের সঙ্গে রঙ্গলাল কিছুদিন  চাকরি করে। অবশেষে ১৮৮৪ সালে ১১ই এপ্রিল তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন।

সাহিত্যকর্ম:

তিমি মূলত স্বদেশপ্রেমিক ছিলেন কবিরূপে বিখ্যাত তার রচিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মিনী উপাখ্যান কর্ম দেবী এবং শূর সুন্দরী টডের অ্যানালস্, অ্যান্ড কুইটিস, অফ রাজস্থান থেকে কাহিনীর অংশ নিয়ে তিনি পদ্মানি উপাখ্যান রচনা করেন। তার মৃত্যুর পর স্বদেশী যুগের বিপ্লবীদের মধ্যে পদ্মিনী উপাখ্যান ছিল উল্লেখযোগ্য। ১৮৬২ সালে প্রকাশিত তার দ্বিতীয় আখ্যান কাব্য কর্ম দেবী। চারটি স্বর্গে বিন্যস্ত এই কাব্যটির বিষয়বস্তু রাজপুত থেকে নেওয়া হয়েছে। এই কাব্যটিতে কবি উনিশ শতকের পুরুষত্বহীন বাঙালির জাতীয়বোধকে জানানোর চেষ্টা করেছেন। কর্মদেবী কাব্যের সম্বন্ধে ভূদেব চৌধুরী বলেছেন। জাতপ্রীতি আত্মসচেতনতা, ও আত্মসমালোচনা, নারী ব্যক্তিদের প্রতি মহিমায় মূল্যবোধ। সবকিছু মিলিয়ে উনিশ শতকের বাঙালি নাগরিক জীবনধর্মের  অংশীদার হয়ে উঠেছেন রঙ্গলাল।

রচনা সমগ্র:

১৮৭২ সালে  কালিদাসের সংস্কৃত কুমারসম্ভব ও ঋতু সংহারের পদ্মাঅনুবাদ করেছিলেন।১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে রচিত কাঞ্চি কাবেরী কাব্যগ্রন্থ প্রাচীন উড়িয়া কাব্যের অনুসরণের লিখিত রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের উৎপল দর্পণ নামে উড়িয়া ভাষায় একটি সংবাদপত্র প্রকাশ করেন। ১৮৮২ সালে রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদনা করেন বাংলা সাহিত্যের নানা ক্ষেত্রে বিচরণকারী উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল_

পদ্মিনী উপাখ্যান (১৮৫৮), কর্ম দেবী (১৮৬২), শূর সুন্দরী(১৮৬৮), হোমারের কাব্যের অনুবাদ, নীতি কুসমাঞ্জলি(১৮৭২)

জীবনবাসন:

১৩ই ১৮৮৭  খ্রিস্টাব্দে ৬০ বছর বয়সে কলকাতা বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তার লেখা এবং সাহিত্যের মধ্য দিয়ে তিনি আজও আমাদের মধ্যে বেঁচে আছেন বেঁচে থাকবেন আজীবন|

তথ্যসূত্র:

  1. উইকিপিডিয়া (wikipedia.org)
  2. দৈনিক স্টেটসম্যান,কলকাতা। ২০২০-০৬-০৮

#Rangalal Bandyopadhyay


Discover more from My State

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Skip to content